Wednesday, September 4, 2024
ফেনীতে বন্যায় ৯৫১ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সব কটি ক্ষতিগ্রস্ত, পাঠদানে অনিশ্চয়তা
বন্যার পানিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও। শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কার করছেন দুই কর্মচারী। গত সোমবার ফেনীর ফাজিলপুর ওয়ালিয়া ফাজিল মাদ্রাসায়ছবি: সৌরভ দাশ
ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার জি এম হাটের নূরপুর আবদুল হাকিম ভূঁইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় এই বিদ্যালয়ে পানি হয় একতলার ছাদ ছুঁই ছুঁই। পানি নেমে গেছে এক সপ্তাহ আগে, গত ২৭ আগস্ট। কিন্তু গতকাল মঙ্গলবারও বিদ্যালয়টির চারটি কক্ষই ছিল কাদায় একাকার।
সরেজমিনে দেখা যায়, দুজন শ্রমিক বিদ্যালয় পরিচ্ছন্নতার কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁদের সঙ্গে আছেন তিনজন শিক্ষক। কিন্তু পাঠদান উপযোগী করা যাচ্ছে না কিছুতেই। শিক্ষকেরা জানান, এই বিদ্যালয়ে প্রাক্-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী রয়েছে ৯৫ জন। বিদ্যালয়ের পরিচ্ছন্নতাকাজ শেষ হতে আরও অন্তত চার দিন লাগবে বলে জানান প্রধান শিক্ষক জার আফসান খানম। এরপর পাঠদানের সময় ঠিক করবেন তাঁরা।
এই বিদ্যালয়ের মতো ফেনীর সব কটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। জেলায় ৩৫১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা, ৫৫৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৪১টি কলেজ রয়েছে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩ লাখ ৮২ হাজার।
এখনো অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠান পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। জেলার প্রাথমিক কোনো বিদ্যালয়ে গতকাল পর্যন্ত পাঠদান শুরু হয়নি। কিছু কিছু মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজে পাঠদান শুরু হলেও উপস্থিতি কম। ঠিক কতটি প্রতিষ্ঠানে পাঠদান শুরু হয়েছে, তার হিসাব নেই সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে। তবে প্রাথমিকে পাঠদান নিয়ে গতকাল উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে জেলা কর্মকর্তা বৈঠক করেছেন। বৈঠকে যেসব বিদ্যালয় পরিষ্কার করা সম্ভব হয়েছে, সেগুলোতে পাঠদান শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসন জানায়, টাকার অঙ্কে প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ সময়সাপেক্ষ। নষ্ট হয়েছে আসবাব, শিক্ষা উপকরণ, ভবন, সীমানাপ্রাচীর ও নলকূপ। এসব কারণে পাঠদান শুরু করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া দাগনভূঞা ও সোনাগাজী উপজেলার অনেক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় তলায় এখনো আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাশাপাশি জেলা ও উপজেলা শিক্ষা কার্যালয়গুলোও ছিল পানির নিচে। গত রোববার দুপুরে শহরের পিটিআই এলাকার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ে ঢুকতেই দেখা যায়, বেশ কিছু কাগজ ও নথিপত্র রোদে শুকাতে দেওয়া হয়েছে। একটি কম্পিউটারও রোদে শুকানো হচ্ছিল। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কক্ষে দেখা যায়, চেয়ারগুলো সব পানিতে ডুবে থাকার কারণে ভেজা।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, তাঁরসহ সব স্কুল পানিতে ডুবেছে। প্রাথমিকভাবে জেলা প্রশাসক বরাবর একটা ক্ষতির হিসাব জমা দেওয়া হয়েছে। এতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪ কোটি ২০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানানো হয়।
মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ইসরাত নূরজাহান সিদ্দিকা বলেন, প্রাথমিকভাবে ১৩৫টি প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতির হিসাব জেলা প্রশাসনের কাছে জমা দিয়েছেন। তবে এখনো কয়েকটি উপজেলা থেকে হিসাব আসেনি। ইসরাত নুরজাহান বলেন, প্রাথমিকভাবে ১৩ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির হিসাব জমা দেওয়া হয়েছে।
৪১ কলেজের সব কটিতে পানি ঢুকেছে। এতে প্রাথমিকভাবে প্রায় তিন কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয় বলে জানান মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক নারায়ণ চন্দ্র নাথ।
জানতে চাইলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) মাহমুদা হক প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখনো সে অর্থে চালু করা যায়নি। পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে। যেগুলো পরিষ্কার হবে, সেগুলোতে পাঠদান করা হবে। কিন্তু বাচ্চাদের স্বাস্থ্যগত দিকটিও দেখতে হবে। কারণ, অনেক প্রতিষ্ঠান এখনো দুর্গন্ধময় হয়ে রয়েছে। আর বইপত্রের জন্য শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর চিঠি দেওয়া হয়েছে।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Israel killed Hezbollah leader Hassan Nasrallah in Beirut strike, group confirms
Hezbollah leader Sayyed Hassan Nasrallah gives a televised address on September 19, 2024, in this screenshot taken from a video. Al-Manar T...

-
It's the southernmost post of exit from Gaza and borders Egypt's Sinai peninsula. There are only two other border crossings from an...
-
Freelancing is a form of self-employment where individuals offer their skills and services to clients or businesses on a project-by-proje...
-
Celebrating the Essence of Mother Language: A Tribute to Linguistic Diversity Language is the cornerstone of human communication, culture,...
No comments:
Post a Comment